মামলার এজাহারে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর কথা উল্লেখ নেই

মামলার এজাহারে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর কথা উল্লেখ নেই

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই নিরস্ত্র আবু সাইদকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি ছোড়ার ভিডিও প্রকাশিত হয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে। এর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। তবে মামলার এজাহারে পুলিশের গুলিতে সাঈদ নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

এজাহারে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দিক থেকে গুলি ছুড়তে থাকে এবং ইটের টুকরো নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়। সহপাঠীরা সাঈদকে (২৩) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

ক্যাম্পাস পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বিভূতি ভূষণ রায়ের লেখা এই এজাহারে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীসহ দুই থেকে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এফআইআরে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ও তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে।

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিজেদের দোষ ঢাকতেই বিক্ষোভকারীদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে পুলিশ। তারা বলছেন, নিরস্ত্র আবু সাঈদকে সামনে থেকে গুলি করে হত্যা করলেও মামলায় আবু সাঈদকে গুলি করার কথা উল্লেখ করেনি পুলিশ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ মারা গেলেও এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সুস্পষ্ট মামলা হয়নি। উল্টো নিজেদের দোষ ঢেকে পুলিশ দায়ী করেছে আন্দোলনকারীদের।

আবু সাঈদকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি বলেন, হাত, বুক, পিঠ, মুখসহ সাঈদের শরীরের শতাধিক স্থানে বুলেটের আঘাতের চিহ্ন ছিল। মাথার পেছনে ফুটো হয়ে রক্ত ঝরছিল।’ সাঈদের শরীর ঝাঁজরা করে দেওয়া সেই পুলিশের বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পুলিশের লুকোচুরির ঘটনা রহস্যজনক। পুলিশের সেই কর্মকর্তাকে কী শাস্তি দেওয়া হয়েছে, জনগণ তা জানতে চায়।

এফআইআরের বিষয়ে এসআই বিভূতি ভূষণ বলেন, ‘আমি মাত্র মামলা দায়ের করেছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য যাচাই করবেন।’

আপনি আরও পড়তে পারেন